বড় বিজয়ের পর কোন পথ যাবে একেপি


তুরস্কের পার্লামেন্ট আরঝুলে থাকছে না কারণ, ক্ষমতাসীন একেপি নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়ে সরকার গঠনে বিরাজমান অনিশ্চয়তার অবসান ঘটিয়েছে জুনের পার্লামেন্ট নির্বাচনে একেপি একক বৃহত্তম দল হিসেবে থাকলেও সরকার গঠনের মতো গরিষ্ঠতা পায়নি আবার নির্ধারিত সময়ে কোয়ালিশন গড়াও সম্ভব হয়নি ফলে সংবিধানের বাধ্যবাধকতায় পয়লা নভেম্বর, অর্থাৎ মাত্র চার মাসের মধ্যে দ্বিতীয়বার সংসদের নির্বাচন করতে হয়েছে এবার মোট সাড়ে আসনের ৩১৭টি পেয়ে একেপি একাই সরকার গঠনে সক্ষম হচ্ছে জুন তারা প্রায় ৪১ শতাংশ ভোট পেয়েছিলেন এবার তা বেড়ে ৫০ শতাংশের কাছাকাছি
এবারকার নির্বাচনী ফলাফল শুধু যে একেপির জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি কিংবা এরদোগান
নেতৃত্বের রাজনৈতিক সাফল্যের নজির, তা নয়। এতে দেশটি বড় ধরনের রাজনৈতিক সঙ্কট থেকেও রেহাই পেলো। জুনের মতো আবার ঝুলন্ত পার্লামেন্টের আশঙ্কা সত্য হলে তুরস্কে বিরাজমান অশান্তি-অস্থিতিশীলতা আরো বেড়ে যেত। তখন সুযোগ নিত সহিংসতাপন্থীরা। ফলে সরকারের দেশ চালনার পাশাপাশি নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতিও ব্যাহত হতো

জুন নির্বাচনে কোনো দল (এমনকি একেপিও) ২৭৬ আসন পায়নি বলে সরকার গঠন নিয়ে সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছিল। এবার একেপি ৩১৭ আসন পেয়েছে। দ্বিতীয় বৃহত্তম দল কামালবাদী সেকুলার রিপাবলিকান পিপলস পার্টি (সিএইচপি) গতবারের মতো ২৫ শতাংশ ভোট বাগিয়েছে। তাদের আসনসংখ্যাও আগের মতো ১৩৪। তৃতীয় দল হলো দক্ষিণপন্থী জাতীয়তাবাদী ন্যাশনালিস্ট মুভমেন্ট পার্টি বা এমএইচপি। তারা গতবার ১৬ শতাংশের বেশি ভোট পেলেও এবার তা শতাংশ কমে যাওয়ার মাশুল দিতে হলো, ৩৯টি আসন হারিয়ে। জুনের নির্বাচনে ৮০টি পেলেও, এবার এমএইচপি পেয়েছে মাত্র ৪১টি আসন। সেবার চমক দেখানো কুর্দি দল পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এইচডিপি) এবার ২১ আসন হারিয়ে ৫৯টিতে নেমেছে। ভোটপ্রাপ্তির হিস্যা ১৩ শতাংশ থেকে নেমেছে ১০ দশমিক শতাংশে

কুর্দিদের মুখপাত্র হওয়ার দাবিদার এইচডিপি এবার নির্বাচনে পিছিয়ে গেছে। অথচ জুনের নির্বাচনে দলটি অপ্রত্যাশিত সাফল্যের চমক দেখিয়েছিল। কুর্দিদের সশস্ত্রসংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা রাখছে যে পিকেকে, তারা বামপন্থী। আর এই বামপন্থীরা মনে করেন, এইচডিপি সাধারণ কুর্দিদের প্রতিনিধি নয়। এরা বুর্জোয়া শ্রেণী সুবিধাভোগী মধ্যবিত্তদের স্বার্থ রক্ষা করে। এইচডিপি মার্কিনসহ সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলোর সমর্থন পেতে আপস করছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। অপর দিকে, দলটি কোনো কোনো ক্ষেত্রে সরকারি দমননীতির শিকারÑ এটাও সত্য

এবার যে অশান্ত সঙ্ঘাতপূর্ণ পরিস্থিতিতে তুরস্কের নির্বাচন হলো, তা তুলে ধরে ভাষ্যকার পিটার শোয়ার্জ লিখেছেন, ‘তুরস্কের বিমান সিরিয়া ইরাকে টার্গেট করে বোমাবর্ষণ করেছে। এই দুই দেশের যুদ্ধ সীমান্ত উপচে তুরস্কের সুরুক আঙ্কারায় রক্তক্ষয়ী সন্ত্রাসবাদী হামলার রূপ নিয়েছে। ইসলামপন্থী একেপি কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টির (পিকেকে) বিরুদ্ধে জারি রেখেছে গৃহযুদ্ধ। দিকে কুর্দি শহরগুলোতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে।এর সাথে সরকার বিরোধী দলের ক্রমাগত সঙ্ঘাত উত্তেজনা তো আছেই।
তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারা, অটোম্যান সাম্রাজ্যের রাজধানী ইস্তাম্বুল এবং তৃতীয় প্রধান নগরী ইজমির এই তিনটি তুর্কি রাজনীতির প্রাণকেন্দ্র। আঙ্কারা-ইস্তাম্বুলে ভোট আসন, দুটোই বেড়েছে একেপির।
এমনকি বিরোধী দলেরশক্ত ঘাঁটিইজমিরেও একেপি আগের চেয়ে ভোট পেয়েছে বেশি। মধ্য আনাতোলিয়া অঞ্চলে তিন ভাগের দুই ভাগ ভোটই পড়েছে দলের বাক্সে। বিস্ময়কর হলো, কুর্দি-অধ্যুষিত পূর্বাঞ্চলেও একেপির ভোট আসন বেড়েছে।জাতির পিতাকামাল পাশার অন্ধভক্ত উগ্র ধর্মনিরপেক্ষ সিএইচপি জোর প্রচারাভিযানের পরও আসন বা ভোট কোনোটাই বাড়াতে পারেনি। এমএইচপির আসন অর্ধেকে নেমে গেছে। এই দলটিই একেপির সাথে কোয়ালিশন গড়তে রাজি না হয়ে নভেম্বরের নির্বাচনকে অনিবার্য করে তুলেছিল। তারা দেশটির ৮৫টি নির্বাচনী জেলার একটিতেও সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। অপর দিকে, একেপি ৬৫টি জেলায় গরিষ্ঠ হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে

তুরস্কের পার্লামেন্টের সদস্য মোট ৫৫০ জন। এবার ভোটার ছিলেন কোটি ৪০ লাখ। ভোট পড়েছে ৮৬ শতাংশের মতো যা গত নির্বাচনের চেয়ে বেশি। প্রদত্ত ভোটের অন্তত ১০ শতংশ না পেলে কোনো দল পার্লামেন্টে আনুষ্ঠানিকভাবে দলীয় মর্যাদা পায় না। তুরস্কের সরকারব্যবস্থা পার্লামেন্টারি হলেও প্রেসিডেন্টের পদ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উল্লেখ্য, বর্তমান প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান ক্ষমতাসীন একেপির প্রতিষ্ঠাতা মূল নেতা। দলটির পুরো নাম জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি

বাংলাদেশের প্রবীণ কূটনীতিক কলামিস্ট মাহমুদ হাসান বলেছেন, ‘অর্থনৈতিকভাবে উদারপন্থী এবং ঐতিহ্যগত ইসলামি আদর্শের দল একেপি এখন কোনো শরিক না নিয়ে আগামী চার বছরের জন্য সরকার গঠন করবে। প্রধানমন্ত্রী আহমদ দাউদোগলুকে অর্থনৈতিক, নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী (কুর্দি) সংক্রান্ত সামাজিক সমস্যা মোকাবেলায় কঠিন প্রয়াস চালাতে হবে।

অর্থাৎ, জাতীয়-আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে তুরস্কের সফল নেতৃত্বদানের বিরাট চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে সরকারকে। উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী দাউদোগলুর ঘোষিত নীতি, ‘কোনো পড়শি দেশের সাথে বিরোধ নয়।বাস্তবে নানা কারণে প্রায় সব প্রতিবেশী রাষ্ট্র নিয়ে তুরস্ককে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।
যা হোক, তুরস্কের প্রভাব মধ্যপ্রাচ্য ছাড়িয়ে অন্যত্রও অনুভূত হচ্ছে। মুসলিম বিশ্বের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিরোধ বা ইস্যুতে তুরস্ক হয় মধ্যস্থতাকারীর মর্যাদায় অথবা তার ভূমিকাকে প্রয়োজনীয় মনে করা হয়। আরব বিশ্বের বিদ্যমান সঙ্কটগুলোর মধ্যে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ সর্বাপেক্ষা ভয়াবহ। সিরিয়া ইস্যুর নিষ্পত্তি এবং সেই সূত্রে সিরীয় উদ্বাস্তুদের ইউরোপে ভিড় করার বিষয়ে তুরস্ক ছাড়া সঙ্কট উত্তরণ সম্ভব নয়। জন্য এখন পাশ্চাত্য তুরস্কের তোয়াজ শুরু করেছে। তুরস্ককেউপহারদিয়ে খুশি করতে জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেল অক্টোবরে আঙ্কারা গেলেও একেপি সরকার নরম হয়নি
অপর দিকে, তুরস্ক ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে (ইইউ) যোগ দেয়ার শর্ত পূরণ করলেও দেশটিকে আজো সদস্য করা হয়নি। এক দশক ধরে ইইউর এই রহস্যময় আচরণের পর এবার সংস্থাটি তুরস্ককে দশমিক ৪১ বিলিয়ন ডলার সাহায্য দিতে চেয়েছে। আরো বলেছে, ইইউতে যোগদানের বিষয়ে পুরনো আলোচনাকে এই সংস্থা চায় পুনরুজ্জীবিত করতে। আসলে সিরিয়ার হাজার হাজার শরণার্থীর অব্যাহত স্রোত ঠেকাতে না পেরে ব্যাপারে সুরাহার জন্য তুরস্কের মন গলানোই মতলব


তুরস্কের পার্লামেন্ট আর ‘ঝুলে থাকছে না’। কারণ, ক্ষমতাসীন একেপি নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়ে সরকার গঠনে বিরাজমান অনিশ্চয়তার অবসান ঘটিয়েছে। ৭ জুনের পার্লামেন্ট নির্বাচনে একেপি একক বৃহত্তম দল হিসেবে থাকলেও সরকার গঠনের মতো গরিষ্ঠতা পায়নি। আবার নির্ধারিত সময়ে কোয়ালিশন গড়াও সম্ভব হয়নি। ফলে সংবিধানের বাধ্যবাধকতায় পয়লা নভেম্বর, অর্থাৎ মাত্র চার মাসের মধ্যে দ্বিতীয়বার সংসদের নির্বাচন করতে হয়েছে। এবার মোট সাড়ে ৫ শ’ আসনের ৩১৭টি পেয়ে একেপি একাই সরকার গঠনে সক্ষম হচ্ছে। ৭ জুন তারা প্রায় ৪১ শতাংশ ভোট পেয়েছিলেন। এবার তা বেড়ে ৫০ শতাংশের কাছাকাছি।
এবারকার নির্বাচনী ফলাফল শুধু যে একেপির জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি কিংবা এরদোগান নেতৃত্বের রাজনৈতিক সাফল্যের নজির, তা নয়। এতে দেশটি বড় ধরনের রাজনৈতিক সঙ্কট থেকেও রেহাই পেলো। ৭ জুনের মতো আবার ঝুলন্ত পার্লামেন্টের আশঙ্কা সত্য হলে তুরস্কে বিরাজমান অশান্তি-অস্থিতিশীলতা আরো বেড়ে যেত। তখন সুযোগ নিত সহিংসতাপন্থীরা। ফলে সরকারের দেশ চালনার পাশাপাশি নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতিও ব্যাহত হতো।

৭ জুন নির্বাচনে কোনো দল (এমনকি একেপিও) ২৭৬ আসন পায়নি বলে সরকার গঠন নিয়ে সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছিল। এবার একেপি ৩১৭ আসন পেয়েছে। দ্বিতীয় বৃহত্তম দল কামালবাদী সেকুলার রিপাবলিকান পিপলস পার্টি (সিএইচপি) গতবারের মতো ২৫ শতাংশ ভোট বাগিয়েছে। তাদের আসনসংখ্যাও আগের মতো ১৩৪। তৃতীয় দল হলো দক্ষিণপন্থী জাতীয়তাবাদী ন্যাশনালিস্ট মুভমেন্ট পার্টি বা এমএইচপি। তারা গতবার ১৬ শতাংশের বেশি ভোট পেলেও এবার তা ৪ শতাংশ কমে যাওয়ার মাশুল দিতে হলো, ৩৯টি আসন হারিয়ে। ৭ জুনের নির্বাচনে ৮০টি পেলেও, এবার এমএইচপি পেয়েছে মাত্র ৪১টি আসন। সেবার চমক দেখানো কুর্দি দল পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এইচডিপি) এবার ২১ আসন হারিয়ে ৫৯টিতে নেমেছে। ভোটপ্রাপ্তির হিস্যা ১৩ শতাংশ থেকে নেমেছে ১০ দশমিক ৭ শতাংশে।

কুর্দিদের মুখপাত্র হওয়ার দাবিদার এইচডিপি এবার নির্বাচনে পিছিয়ে গেছে। অথচ ৭ জুনের নির্বাচনে দলটি অপ্রত্যাশিত সাফল্যের চমক দেখিয়েছিল। কুর্দিদের সশস্ত্রসংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা রাখছে যে পিকেকে, তারা বামপন্থী। আর এই বামপন্থীরা মনে করেন, এইচডিপি সাধারণ কুর্দিদের প্রতিনিধি নয়। এরা বুর্জোয়া শ্রেণী ও সুবিধাভোগী মধ্যবিত্তদের স্বার্থ রক্ষা করে। এইচডিপি মার্কিনসহ সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলোর সমর্থন পেতে আপস করছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। অপর দিকে, দলটি কোনো কোনো ক্ষেত্রে সরকারি দমননীতির শিকারÑ এটাও সত্য।

এবার যে অশান্ত ও সঙ্ঘাতপূর্ণ পরিস্থিতিতে তুরস্কের নির্বাচন হলো, তা তুলে ধরে ভাষ্যকার পিটার শোয়ার্জ লিখেছেন, ‘তুরস্কের বিমান সিরিয়া ও ইরাকে টার্গেট করে বোমাবর্ষণ করেছে। এই দুই দেশের যুদ্ধ সীমান্ত উপচে তুরস্কের সুরুক ও আঙ্কারায় রক্তক্ষয়ী সন্ত্রাসবাদী হামলার রূপ নিয়েছে। ইসলামপন্থী একেপি কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টির (পিকেকে) বিরুদ্ধে জারি রেখেছে গৃহযুদ্ধ। এ দিকে কুর্দি শহরগুলোতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে।’ এর সাথে সরকার ও বিরোধী দলের ক্রমাগত সঙ্ঘাত ও উত্তেজনা তো আছেই।
তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারা, অটোম্যান সাম্রাজ্যের রাজধানী ইস্তাম্বুল এবং তৃতীয় প্রধান নগরী ইজমির এই তিনটি তুর্কি রাজনীতির প্রাণকেন্দ্র। আঙ্কারা-ইস্তাম্বুলে ভোট ও আসন, দুটোই বেড়েছে একেপির।
এমনকি বিরোধী দলের ‘শক্ত ঘাঁটি’ ইজমিরেও একেপি আগের চেয়ে ভোট পেয়েছে বেশি। মধ্য আনাতোলিয়া অঞ্চলে তিন ভাগের দুই ভাগ ভোটই পড়েছে এ দলের বাক্সে। বিস্ময়কর হলো, কুর্দি-অধ্যুষিত পূর্বাঞ্চলেও একেপির ভোট ও আসন বেড়েছে। ‘জাতির পিতা’ কামাল পাশার অন্ধভক্ত ও উগ্র ধর্মনিরপেক্ষ সিএইচপি জোর প্রচারাভিযানের পরও আসন বা ভোট কোনোটাই বাড়াতে পারেনি। এমএইচপির আসন অর্ধেকে নেমে গেছে। এই দলটিই একেপির সাথে কোয়ালিশন গড়তে রাজি না হয়ে ১ নভেম্বরের নির্বাচনকে অনিবার্য করে তুলেছিল। তারা দেশটির ৮৫টি নির্বাচনী জেলার একটিতেও সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। অপর দিকে, একেপি ৬৫টি জেলায় গরিষ্ঠ হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে।

তুরস্কের পার্লামেন্টের সদস্য মোট ৫৫০ জন। এবার ভোটার ছিলেন ৫ কোটি ৪০ লাখ। ভোট পড়েছে ৮৬ শতাংশের মতো যা গত নির্বাচনের চেয়ে বেশি। প্রদত্ত ভোটের অন্তত ১০ শতংশ না পেলে কোনো দল পার্লামেন্টে আনুষ্ঠানিকভাবে দলীয় মর্যাদা পায় না। তুরস্কের সরকারব্যবস্থা পার্লামেন্টারি হলেও প্রেসিডেন্টের পদ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উল্লেখ্য, বর্তমান প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান ক্ষমতাসীন একেপির প্রতিষ্ঠাতা ও মূল নেতা। দলটির পুরো নাম জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি।

বাংলাদেশের প্রবীণ কূটনীতিক ও কলামিস্ট মাহমুদ হাসান বলেছেন, ‘অর্থনৈতিকভাবে উদারপন্থী এবং ঐতিহ্যগত ইসলামি আদর্শের দল একেপি এখন কোনো শরিক না নিয়ে আগামী চার বছরের জন্য সরকার গঠন করবে। প্রধানমন্ত্রী আহমদ দাউদোগলুকে অর্থনৈতিক, নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী (কুর্দি) সংক্রান্ত ও সামাজিক সমস্যা মোকাবেলায় কঠিন প্রয়াস চালাতে হবে।’

অর্থাৎ, জাতীয়-আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে তুরস্কের সফল নেতৃত্বদানের বিরাট চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে সরকারকে। উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী দাউদোগলুর ঘোষিত নীতি, ‘কোনো পড়শি দেশের সাথে বিরোধ নয়।’ বাস্তবে নানা কারণে প্রায় সব প্রতিবেশী রাষ্ট্র নিয়ে তুরস্ককে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।
যা হোক, তুরস্কের প্রভাব মধ্যপ্রাচ্য ছাড়িয়ে অন্যত্রও অনুভূত হচ্ছে। মুসলিম বিশ্বের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিরোধ বা ইস্যুতে তুরস্ক হয় মধ্যস্থতাকারীর মর্যাদায় অথবা তার ভূমিকাকে প্রয়োজনীয় মনে করা হয়। আরব বিশ্বের বিদ্যমান সঙ্কটগুলোর মধ্যে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ সর্বাপেক্ষা ভয়াবহ। সিরিয়া ইস্যুর নিষ্পত্তি এবং সেই সূত্রে সিরীয় উদ্বাস্তুদের ইউরোপে ভিড় করার বিষয়ে তুরস্ক ছাড়া সঙ্কট উত্তরণ সম্ভব নয়। এ জন্য এখন পাশ্চাত্য তুরস্কের তোয়াজ শুরু করেছে। তুরস্ককে ‘উপহার’ দিয়ে খুশি করতে জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেল অক্টোবরে আঙ্কারা গেলেও একেপি সরকার নরম হয়নি।
অপর দিকে, তুরস্ক ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে (ইইউ) যোগ দেয়ার শর্ত পূরণ করলেও দেশটিকে আজো সদস্য করা হয়নি। এক দশক ধরে ইইউর এই রহস্যময় আচরণের পর এবার সংস্থাটি তুরস্ককে ৩ দশমিক ৪১ বিলিয়ন ডলার সাহায্য দিতে চেয়েছে। আরো বলেছে, ইইউতে যোগদানের বিষয়ে পুরনো আলোচনাকে এই সংস্থা চায় পুনরুজ্জীবিত করতে। আসলে সিরিয়ার হাজার হাজার শরণার্থীর অব্যাহত স্রোত ঠেকাতে না পেরে এ ব্যাপারে সুরাহার জন্য তুরস্কের মন গলানোই মতলব।
- See more at: http://www.onnodiganta.com/article/detail/4316#sthash.FeUvcgc1.dpuf
তুরস্কের পার্লামেন্ট আর ‘ঝুলে থাকছে না’। কারণ, ক্ষমতাসীন একেপি নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়ে সরকার গঠনে বিরাজমান অনিশ্চয়তার অবসান ঘটিয়েছে। ৭ জুনের পার্লামেন্ট নির্বাচনে একেপি একক বৃহত্তম দল হিসেবে থাকলেও সরকার গঠনের মতো গরিষ্ঠতা পায়নি। আবার নির্ধারিত সময়ে কোয়ালিশন গড়াও সম্ভব হয়নি। ফলে সংবিধানের বাধ্যবাধকতায় পয়লা নভেম্বর, অর্থাৎ মাত্র চার মাসের মধ্যে দ্বিতীয়বার সংসদের নির্বাচন করতে হয়েছে। এবার মোট সাড়ে ৫ শ’ আসনের ৩১৭টি পেয়ে একেপি একাই সরকার গঠনে সক্ষম হচ্ছে। ৭ জুন তারা প্রায় ৪১ শতাংশ ভোট পেয়েছিলেন। এবার তা বেড়ে ৫০ শতাংশের কাছাকাছি।
এবারকার নির্বাচনী ফলাফল শুধু যে একেপির জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি কিংবা এরদোগান নেতৃত্বের রাজনৈতিক সাফল্যের নজির, তা নয়। এতে দেশটি বড় ধরনের রাজনৈতিক সঙ্কট থেকেও রেহাই পেলো। ৭ জুনের মতো আবার ঝুলন্ত পার্লামেন্টের আশঙ্কা সত্য হলে তুরস্কে বিরাজমান অশান্তি-অস্থিতিশীলতা আরো বেড়ে যেত। তখন সুযোগ নিত সহিংসতাপন্থীরা। ফলে সরকারের দেশ চালনার পাশাপাশি নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতিও ব্যাহত হতো।

৭ জুন নির্বাচনে কোনো দল (এমনকি একেপিও) ২৭৬ আসন পায়নি বলে সরকার গঠন নিয়ে সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছিল। এবার একেপি ৩১৭ আসন পেয়েছে। দ্বিতীয় বৃহত্তম দল কামালবাদী সেকুলার রিপাবলিকান পিপলস পার্টি (সিএইচপি) গতবারের মতো ২৫ শতাংশ ভোট বাগিয়েছে। তাদের আসনসংখ্যাও আগের মতো ১৩৪। তৃতীয় দল হলো দক্ষিণপন্থী জাতীয়তাবাদী ন্যাশনালিস্ট মুভমেন্ট পার্টি বা এমএইচপি। তারা গতবার ১৬ শতাংশের বেশি ভোট পেলেও এবার তা ৪ শতাংশ কমে যাওয়ার মাশুল দিতে হলো, ৩৯টি আসন হারিয়ে। ৭ জুনের নির্বাচনে ৮০টি পেলেও, এবার এমএইচপি পেয়েছে মাত্র ৪১টি আসন। সেবার চমক দেখানো কুর্দি দল পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এইচডিপি) এবার ২১ আসন হারিয়ে ৫৯টিতে নেমেছে। ভোটপ্রাপ্তির হিস্যা ১৩ শতাংশ থেকে নেমেছে ১০ দশমিক ৭ শতাংশে।

কুর্দিদের মুখপাত্র হওয়ার দাবিদার এইচডিপি এবার নির্বাচনে পিছিয়ে গেছে। অথচ ৭ জুনের নির্বাচনে দলটি অপ্রত্যাশিত সাফল্যের চমক দেখিয়েছিল। কুর্দিদের সশস্ত্রসংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা রাখছে যে পিকেকে, তারা বামপন্থী। আর এই বামপন্থীরা মনে করেন, এইচডিপি সাধারণ কুর্দিদের প্রতিনিধি নয়। এরা বুর্জোয়া শ্রেণী ও সুবিধাভোগী মধ্যবিত্তদের স্বার্থ রক্ষা করে। এইচডিপি মার্কিনসহ সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলোর সমর্থন পেতে আপস করছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। অপর দিকে, দলটি কোনো কোনো ক্ষেত্রে সরকারি দমননীতির শিকারÑ এটাও সত্য।

এবার যে অশান্ত ও সঙ্ঘাতপূর্ণ পরিস্থিতিতে তুরস্কের নির্বাচন হলো, তা তুলে ধরে ভাষ্যকার পিটার শোয়ার্জ লিখেছেন, ‘তুরস্কের বিমান সিরিয়া ও ইরাকে টার্গেট করে বোমাবর্ষণ করেছে। এই দুই দেশের যুদ্ধ সীমান্ত উপচে তুরস্কের সুরুক ও আঙ্কারায় রক্তক্ষয়ী সন্ত্রাসবাদী হামলার রূপ নিয়েছে। ইসলামপন্থী একেপি কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টির (পিকেকে) বিরুদ্ধে জারি রেখেছে গৃহযুদ্ধ। এ দিকে কুর্দি শহরগুলোতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে।’ এর সাথে সরকার ও বিরোধী দলের ক্রমাগত সঙ্ঘাত ও উত্তেজনা তো আছেই।
তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারা, অটোম্যান সাম্রাজ্যের রাজধানী ইস্তাম্বুল এবং তৃতীয় প্রধান নগরী ইজমির এই তিনটি তুর্কি রাজনীতির প্রাণকেন্দ্র। আঙ্কারা-ইস্তাম্বুলে ভোট ও আসন, দুটোই বেড়েছে একেপির।
এমনকি বিরোধী দলের ‘শক্ত ঘাঁটি’ ইজমিরেও একেপি আগের চেয়ে ভোট পেয়েছে বেশি। মধ্য আনাতোলিয়া অঞ্চলে তিন ভাগের দুই ভাগ ভোটই পড়েছে এ দলের বাক্সে। বিস্ময়কর হলো, কুর্দি-অধ্যুষিত পূর্বাঞ্চলেও একেপির ভোট ও আসন বেড়েছে। ‘জাতির পিতা’ কামাল পাশার অন্ধভক্ত ও উগ্র ধর্মনিরপেক্ষ সিএইচপি জোর প্রচারাভিযানের পরও আসন বা ভোট কোনোটাই বাড়াতে পারেনি। এমএইচপির আসন অর্ধেকে নেমে গেছে। এই দলটিই একেপির সাথে কোয়ালিশন গড়তে রাজি না হয়ে ১ নভেম্বরের নির্বাচনকে অনিবার্য করে তুলেছিল। তারা দেশটির ৮৫টি নির্বাচনী জেলার একটিতেও সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। অপর দিকে, একেপি ৬৫টি জেলায় গরিষ্ঠ হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে।

তুরস্কের পার্লামেন্টের সদস্য মোট ৫৫০ জন। এবার ভোটার ছিলেন ৫ কোটি ৪০ লাখ। ভোট পড়েছে ৮৬ শতাংশের মতো যা গত নির্বাচনের চেয়ে বেশি। প্রদত্ত ভোটের অন্তত ১০ শতংশ না পেলে কোনো দল পার্লামেন্টে আনুষ্ঠানিকভাবে দলীয় মর্যাদা পায় না। তুরস্কের সরকারব্যবস্থা পার্লামেন্টারি হলেও প্রেসিডেন্টের পদ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উল্লেখ্য, বর্তমান প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান ক্ষমতাসীন একেপির প্রতিষ্ঠাতা ও মূল নেতা। দলটির পুরো নাম জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি।

বাংলাদেশের প্রবীণ কূটনীতিক ও কলামিস্ট মাহমুদ হাসান বলেছেন, ‘অর্থনৈতিকভাবে উদারপন্থী এবং ঐতিহ্যগত ইসলামি আদর্শের দল একেপি এখন কোনো শরিক না নিয়ে আগামী চার বছরের জন্য সরকার গঠন করবে। প্রধানমন্ত্রী আহমদ দাউদোগলুকে অর্থনৈতিক, নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী (কুর্দি) সংক্রান্ত ও সামাজিক সমস্যা মোকাবেলায় কঠিন প্রয়াস চালাতে হবে।’
- See more at: http://www.onnodiganta.com/article/detail/4316#sthash.FeUvcgc1.dpuf
তুরস্কের পার্লামেন্ট আর ‘ঝুলে থাকছে না’। কারণ, ক্ষমতাসীন একেপি নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়ে সরকার গঠনে বিরাজমান অনিশ্চয়তার অবসান ঘটিয়েছে। ৭ জুনের পার্লামেন্ট নির্বাচনে একেপি একক বৃহত্তম দল হিসেবে থাকলেও সরকার গঠনের মতো গরিষ্ঠতা পায়নি। আবার নির্ধারিত সময়ে কোয়ালিশন গড়াও সম্ভব হয়নি। ফলে সংবিধানের বাধ্যবাধকতায় পয়লা নভেম্বর, অর্থাৎ মাত্র চার মাসের মধ্যে দ্বিতীয়বার সংসদের নির্বাচন করতে হয়েছে। এবার মোট সাড়ে ৫ শ’ আসনের ৩১৭টি পেয়ে একেপি একাই সরকার গঠনে সক্ষম হচ্ছে। ৭ জুন তারা প্রায় ৪১ শতাংশ ভোট পেয়েছিলেন। এবার তা বেড়ে ৫০ শতাংশের কাছাকাছি।
এবারকার নির্বাচনী ফলাফল শুধু যে একেপির জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি কিংবা এরদোগান নেতৃত্বের রাজনৈতিক সাফল্যের নজির, তা নয়। এতে দেশটি বড় ধরনের রাজনৈতিক সঙ্কট থেকেও রেহাই পেলো। ৭ জুনের মতো আবার ঝুলন্ত পার্লামেন্টের আশঙ্কা সত্য হলে তুরস্কে বিরাজমান অশান্তি-অস্থিতিশীলতা আরো বেড়ে যেত। তখন সুযোগ নিত সহিংসতাপন্থীরা। ফলে সরকারের দেশ চালনার পাশাপাশি নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতিও ব্যাহত হতো।

৭ জুন নির্বাচনে কোনো দল (এমনকি একেপিও) ২৭৬ আসন পায়নি বলে সরকার গঠন নিয়ে সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছিল। এবার একেপি ৩১৭ আসন পেয়েছে। দ্বিতীয় বৃহত্তম দল কামালবাদী সেকুলার রিপাবলিকান পিপলস পার্টি (সিএইচপি) গতবারের মতো ২৫ শতাংশ ভোট বাগিয়েছে। তাদের আসনসংখ্যাও আগের মতো ১৩৪। তৃতীয় দল হলো দক্ষিণপন্থী জাতীয়তাবাদী ন্যাশনালিস্ট মুভমেন্ট পার্টি বা এমএইচপি। তারা গতবার ১৬ শতাংশের বেশি ভোট পেলেও এবার তা ৪ শতাংশ কমে যাওয়ার মাশুল দিতে হলো, ৩৯টি আসন হারিয়ে। ৭ জুনের নির্বাচনে ৮০টি পেলেও, এবার এমএইচপি পেয়েছে মাত্র ৪১টি আসন। সেবার চমক দেখানো কুর্দি দল পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এইচডিপি) এবার ২১ আসন হারিয়ে ৫৯টিতে নেমেছে। ভোটপ্রাপ্তির হিস্যা ১৩ শতাংশ থেকে নেমেছে ১০ দশমিক ৭ শতাংশে।

কুর্দিদের মুখপাত্র হওয়ার দাবিদার এইচডিপি এবার নির্বাচনে পিছিয়ে গেছে। অথচ ৭ জুনের নির্বাচনে দলটি অপ্রত্যাশিত সাফল্যের চমক দেখিয়েছিল। কুর্দিদের সশস্ত্রসংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা রাখছে যে পিকেকে, তারা বামপন্থী। আর এই বামপন্থীরা মনে করেন, এইচডিপি সাধারণ কুর্দিদের প্রতিনিধি নয়। এরা বুর্জোয়া শ্রেণী ও সুবিধাভোগী মধ্যবিত্তদের স্বার্থ রক্ষা করে। এইচডিপি মার্কিনসহ সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলোর সমর্থন পেতে আপস করছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। অপর দিকে, দলটি কোনো কোনো ক্ষেত্রে সরকারি দমননীতির শিকারÑ এটাও সত্য।

এবার যে অশান্ত ও সঙ্ঘাতপূর্ণ পরিস্থিতিতে তুরস্কের নির্বাচন হলো, তা তুলে ধরে ভাষ্যকার পিটার শোয়ার্জ লিখেছেন, ‘তুরস্কের বিমান সিরিয়া ও ইরাকে টার্গেট করে বোমাবর্ষণ করেছে। এই দুই দেশের যুদ্ধ সীমান্ত উপচে তুরস্কের সুরুক ও আঙ্কারায় রক্তক্ষয়ী সন্ত্রাসবাদী হামলার রূপ নিয়েছে। ইসলামপন্থী একেপি কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টির (পিকেকে) বিরুদ্ধে জারি রেখেছে গৃহযুদ্ধ। এ দিকে কুর্দি শহরগুলোতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে।’ এর সাথে সরকার ও বিরোধী দলের ক্রমাগত সঙ্ঘাত ও উত্তেজনা তো আছেই।
তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারা, অটোম্যান সাম্রাজ্যের রাজধানী ইস্তাম্বুল এবং তৃতীয় প্রধান নগরী ইজমির এই তিনটি তুর্কি রাজনীতির প্রাণকেন্দ্র। আঙ্কারা-ইস্তাম্বুলে ভোট ও আসন, দুটোই বেড়েছে একেপির।
এমনকি বিরোধী দলের ‘শক্ত ঘাঁটি’ ইজমিরেও একেপি আগের চেয়ে ভোট পেয়েছে বেশি। মধ্য আনাতোলিয়া অঞ্চলে তিন ভাগের দুই ভাগ ভোটই পড়েছে এ দলের বাক্সে। বিস্ময়কর হলো, কুর্দি-অধ্যুষিত পূর্বাঞ্চলেও একেপির ভোট ও আসন বেড়েছে। ‘জাতির পিতা’ কামাল পাশার অন্ধভক্ত ও উগ্র ধর্মনিরপেক্ষ সিএইচপি জোর প্রচারাভিযানের পরও আসন বা ভোট কোনোটাই বাড়াতে পারেনি। এমএইচপির আসন অর্ধেকে নেমে গেছে। এই দলটিই একেপির সাথে কোয়ালিশন গড়তে রাজি না হয়ে ১ নভেম্বরের নির্বাচনকে অনিবার্য করে তুলেছিল। তারা দেশটির ৮৫টি নির্বাচনী জেলার একটিতেও সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। অপর দিকে, একেপি ৬৫টি জেলায় গরিষ্ঠ হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে।

তুরস্কের পার্লামেন্টের সদস্য মোট ৫৫০ জন। এবার ভোটার ছিলেন ৫ কোটি ৪০ লাখ। ভোট পড়েছে ৮৬ শতাংশের মতো যা গত নির্বাচনের চেয়ে বেশি। প্রদত্ত ভোটের অন্তত ১০ শতংশ না পেলে কোনো দল পার্লামেন্টে আনুষ্ঠানিকভাবে দলীয় মর্যাদা পায় না। তুরস্কের সরকারব্যবস্থা পার্লামেন্টারি হলেও প্রেসিডেন্টের পদ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উল্লেখ্য, বর্তমান প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান ক্ষমতাসীন একেপির প্রতিষ্ঠাতা ও মূল নেতা। দলটির পুরো নাম জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি।

বাংলাদেশের প্রবীণ কূটনীতিক ও কলামিস্ট মাহমুদ হাসান বলেছেন, ‘অর্থনৈতিকভাবে উদারপন্থী এবং ঐতিহ্যগত ইসলামি আদর্শের দল একেপি এখন কোনো শরিক না নিয়ে আগামী চার বছরের জন্য সরকার গঠন করবে। প্রধানমন্ত্রী আহমদ দাউদোগলুকে অর্থনৈতিক, নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী (কুর্দি) সংক্রান্ত ও সামাজিক সমস্যা মোকাবেলায় কঠিন প্রয়াস চালাতে হবে।’
- See more at: http://www.onnodiganta.com/article/detail/4316#sthash.FeUvcgc1.dpuf

No comments: