দক্ষিণ ভিয়েতনামে স্যাটেলাইট ট্র্যাকিং ও ইমেজিং সেন্টার
গড়তে চলেছে ভারত। এই কেন্দ্রের সাহায্যে সরাসরি ভারতীয় উপগ্রহের মাধ্যমে চীন এবং দক্ষিণ চীন সাগরের ছবি সংগ্রহ করতে পারবে হ্যানয়। এই পদক্ষেপ একদিকে যেমন ভারত-ভিয়েতনাম মৈত্রীর ভিত মজবুত করবে, অন্যদিকে তা বেইজিংকে যথেষ্ট অস্বস্তিতে ফেলবে বলে মনে করছেন ভারতের কূটনৈতিক মহল।
দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি অঞ্চলভিত্তিক বিবাদে চীন বিরোধিতায় সামিল ভিয়েতনাম ও ভারত। মূলত কৃষি, বিজ্ঞান এবং আবহাওয়ার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হলেও নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের মতে, সামরিক ক্ষেত্রেও উপগ্রহ চিত্র অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের আধিপত্য খর্ব করার লক্ষ্যে বেশ কিছু দিন ধরেই উন্নত সামরিক প্রযুক্তির খোঁজে রয়েছে ভিয়েতনাম।
সিঙ্গাপুরের রাজারত্নম স্কুল অফ ইন্টারন্যাশনাল
স্টাডিজ-এর মেরিন সিকিউরিটি এক্সপার্ট কলিন কোহ জানিয়েছেন, 'সামরিক ক্ষেত্রে এই পদক্ষেপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দুই পক্ষের কাছেই বিষয়টি লাভজনক। ভিয়েতনাম যেমন এই প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে চিনের প্রতিরোধ পাঁচিলে ফাটল খুঁজে পাবে, তেমনই ভারতের পক্ষেও নজরদারির পরিধি বৃদ্ধি পাবে।'
জানা গিয়েছে, ভিয়েতনামের হো চি মিন সিটিতে প্রস্তাবিত প্রকল্পটির ব্যয়ভার বহন এবং প্রযুক্তিগত সাহায্য করবে ইসরো। প্রকল্পটির আনুমানিক খরচ হতে পারে ২.৩ কোটি ডলার। সংস্থার মুখপাত্র দেবীপ্রসাদ কার্নিক জানিয়েছেন, এর আগে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ, ব্রুনেই, ইন্দোনেশিয়া ও মরিশাসে স্যাটেলাইট ট্র্যাকিং গ্রাউন্ড স্টেশন স্থাপন করেছে ভারত। মূলতউত্ক্ষেপণের পরবর্তী প্রাথমিক পর্যায়ে উপগ্রহ সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করতে সাহায্য করে এই কেন্দ্রগুলি।
তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, বিদেশের মাটিতে থাকা অন্য গ্রাউন্ট স্টেশনগুলির চেয়ে প্রযুক্তিগত কারণে বেশ কয়েক ধাপ এগিয়ে থাকবে ভিয়েতনামের স্টেশনটি। এই স্টেশনের সাহায্যে ভারতীয় উপগ্রহের তোলা ছবি সরাসরি কাজে লাগাতে পারবে হ্যানয়। এক সরকারি আধিকারিকের কথায়, 'কূটনৈতিক চুক্তির মাধ্যমে অনুমতি ছাড়াই সরাসরি আইআরএস-এর ছবি নিতে পারবে ভিয়েতনাম। বলা বাহুল্য বেশ কিছু ছবিতে চিনের অংশ দেখা যাবে যা ভিয়েতনামের প্রয়োজন।'
নিরাপত্তা বিশারদদের মতে, চীনা নৌ-ঘাঁটি, উপকূলরক্ষী ও নৌ-সেনার গতিবিধি এবং দক্ষিণ চিন সাগরে চিনের তৈরি কৃত্রিম দ্বীপগুলির সাম্প্রতিক ছবি সংগ্রহ করাই হবে ভিয়েতনামের প্রধান লক্ষ্য। তবে প্রকল্পটি এখনও চিন্তা-ভাবনার পর্যায়ে রয়েছে বলে জানিয়েছেন কার্নিক।
No comments:
Post a Comment