জোনাথন কুক পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্রিটিশ সাংবাদিক। ২০০১ সাল থেকে তিনি ইসরাইলের নাজারেথে বসবাস করে আসছেন। ইসরাইল-ফিলিস্তিন দ্বন্দ্বের ওপর তার বেশ ক’টি বই রয়েছে। এর মধ্যে Blood and Religion :
The Unmasking of the Jewish State (2006)I Israel and the Clash of Civilisations
: Iraq, Iran and the Plan to Remake the Middle East (2008) বিশেষভাবে আলোচিত। জনাথনের Zionism’s roots help
us interpret Israel today শীর্ষক লেখাটি ইসরাইল-ফিলিস্তিন সঙ্কটের মূল বিষয়টি বুঝতে সহায়তা করবে বলে আমাদের বিশ্বাস।
লেখাটি ভাষান্তর করেছেন তানজিলা কাওকাব
ইসরাইলি সেনাবাহিনীর উপপ্রধান জেনারেল ইয়াইর গোলান গত সপ্তাহে ইহুদি গণহত্যা দিবস উপলক্ষে গেল শতাব্দীর তিরিশ দশকের জার্মানির সাথে আজকের ইসরায়েলের তুলনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘অতীতের ইউরোপের মতো আজকের ইসরাইলে বিদ্রোহের প্রক্রিয়াকে খুব সহজেই চিনে নেয়া যায়।
অপরিচিতকে ঘৃণা করা কঠিন কিছু নয়। বিষয়টি খুব সহজেই ভীতি ও আতঙ্ক ছড়ায়।’ এই ব্যাখ্যা যেভাবে তিনি দাঁড় করিয়েছেন তা অন্তত তার কাছ থেকে কোনোভাবেই আশা করা যায় না।আরেকটি বক্তব্য পাওয়া গেছে লন্ডনের সাবেক মেয়র কেন লিভিংস্টোনের কাছ থেকে। তিনি বলেন, ১৯৩৩ সালের দিকে হিটলার ইহুদিবাদীদের রীতিমতো সমর্থন করে গেছেন। ওই সময় নাৎসিরা জার্মান ইহুদিদের ফিলিস্তিনে অভিবাসনে পাঠানোর বিষয়ে একটি চুক্তি সই করে।
একটু ভিন্নভাবে হলেও দু’জনই তাদের বক্তব্যে একটি ঘৃণ্যচুক্তির বিষয় তুলে এনেছেন। এই চুক্তির কথা বর্তমানে অনেকেই বিস্মৃত। যদিও ইসরাইল-ফিলিস্তিনের সঙ্ঘাত বুঝতে এ চুক্তিটি বেশ সহায়ক হতে পারে।
১৯১৭ সালে বেলফোর ঘোষণা দেয় ব্রিটিশ সরকার। এই নথিতেই প্রথম ইহুদিদের জন্য একটি পৃথক আবাসভূমির কথা বলা হয়। ফিলিস্তিনে এমন একটি রাষ্ট্রের স্বপ্ন ইহুদিরা দীর্ঘ দিন থেকে লালন করে আসছিল। ব্রিটিশ মন্ত্রিসভার মাত্র একজন মন্ত্রী এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছিলেন। তিনি হলেন এডউইন মন্টাগো, ওই মন্ত্রিপরিষদের একমাত্র ইহুদি সদস্য। এক বিবৃতিতে তিনি ওই সময় বলেছিলেন, তার সরকারের অবস্থান প্রতিটি দেশে ইহুদিবিদ্বেষের বীজ বুনে দেবে।
একা প্রতিবাদ করলেও এই ধারণা পোষণকারী তিনিই একমাত্র ব্যক্তি ছিলেন না। ১৮৮০ সাল থেকে ১৯২০ সাল পর্যন্ত যে ৪০ লাখ ইহুদি ইউরোপ ছেড়েছিলেন তাদের মধ্যে মাত্র এক লাখ প্রত্যাশা অনুসারে ফিলিস্তিনে গিয়ে ওঠেন। ইসরায়েলি ঔপন্যাসিক এ বি ইয়েহোশুয়া একবার লিখেছিলেন, ‘বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে ইহুদিরা যদি কোনো নির্বাচনের আয়োজন করত তাহলে দেখা যেত মাত্র ছয় থেকে সাত শতাংশ ইহুদি ভোট দিয়েছে।’
মন্টাগুর ভয় ছিল, ইউরোপ থেকে বহু দূরে ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করলেই তা ইউরোপের ইহুদিবিদ্বেষের ইতি ঘটাতে পারবে না। ওই সময় ইউরোপে জাতিগোষ্ঠীগত দিক থেকে একটি ধারণা প্রতিষ্ঠিত ছিল, তা হলো, প্রতিটি গোষ্ঠীর জন্যই নিজস্ব একটি আবাসভূমির প্রয়োজন, যেখানে তারা বিকশিত হতে পারবে। ওই সময় ইহুদিদের দেখা হতো সমস্যা হিসেবে। কারণ খ্রিষ্টানপ্রধান এলাকায় তাদের বিবেচনা করা হতো জাতীয় মডেলের ক্ষেত্রে ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে।
ইহুদিরা একটি পৃথক জাতি। যে-কেউ ইচ্ছা করলেই তাদের সাথে সংহতি স্থাপন করতে পারে না। এ কারণেই তাদের ইউরোপ থেকে অন্যত্র সরিয়ে দেয়ার বিষয়টিকে উৎসাহিত করা হয়। ব্রিটিশ দৃষ্টিকোণ থেকে বেলফোর ঘোষণা ওই লক্ষ্য অর্জনের একটি হাতিয়ার ছিল।
রাজনৈতিক ইহুদিবাদের জনক থিয়োডর হেরজেল এই ইহুদিবিদ্বেষী অবস্থান খুব ভালো করেই বুঝতে পেরেছিলেন। তিনি জানতেন ইউরোপে সত্যিকারের গ্রহণযোগ্যতা কখনোই পাওয়া যাবে না।
এ কারণেই লিভিংস্টোনের মন্তব্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সত্য। এই সত্যকে হেরজেল এবং আদি ইহুদিবাদী নেতারা মেনে নিয়েছিলেন। হেরজেল মনে করতেন, ইহুদিদের অবশ্যই তাদের পৃথক সত্তা, পৃথক জাতি হওয়ার বিষয়টি মেনে নিতে হবে। ফিলিস্তিনে ইহুদিদের বসতি স্থাপনের বিষয়টি ব্রিটেনই নিষ্পত্তি করে ফেলে। এর সাথে ইউরোপের বাকি নেতৃবৃন্দের সংশ্লিষ্টতার কৃতিত্বও তাদের।
শুরুর দিকে নাৎসি নেতারাও এর সাথে সংশ্লিষ্ট ছিলেন। ইহুদি গণহত্যার অন্যতম পরিকল্পনাকারী এডলফ ইচম্যান ১৯৩৭ সালে ফিলিস্তিন সফর করেন। ইহুদিদের অভিবাসন নিশ্চিত করাই ছিল তার উদ্দেশ্য। যদিও ১৯৪৪ সাল নাগাদ নাৎসিরা অভিবাসনের ভাবনা বাতিল করে গণহত্যাকেই অধিক উপযোগী হিসেবে গ্রহণযোগ্য সমাধান হিসেবে কার্যকর করতে শুরু করে।
নাৎসিদের উত্থানের আগে ইহুদিরা ফিলিস্তিনে একটি পৃথক আবাসভূমি গড়ার তীব্র বিরোধী ছিল। এখন অবশ্য তারা আর সেসব কথা ভাবতে চায় না। আমরা স্মরণ করি সেটাও হয়তো তাদের ইচ্ছা নয়। আর যারা স্মরণ করতে চায়, লিভিংস্টোনের মতো তাদের সবার শরীরে ইহুদিবিদ্বেষীর তকমা সেঁটে দেয়া হয়। অভিযোগ করা হয়, ইহুদিবাদকে নাৎসিবাদের সাথে তুলনা করা হচ্ছে।
তবে ওই অস্বস্তিকর সময়টিকে পর্যালোচনা করার একটি ভালো কারণ এটি। ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুসহ ইসরাইলের আধুনিক নেতারা বারবারই দাবি করেন, ইহুদিদের আবাসভূমি একটিই, আর সেটি হলো ইসরাইল। ইউরোপে প্রতিটি সন্ত্রাসী হামলা হওয়ার পর তারা ইহুদিদের ইসরাইলে চলে আসার আহ্বান জানায়। তাদের যুক্তি, ইহুদিরা যেখানে আছে সেটা তাদের জন্য নিরাপদ আশ্রয় নয়।
নিজেদের পৃথক অস্তিত্ব জানান দেয়ার সব বৈশিষ্ট্য আজো ইসরাইলের মধ্যে বর্তমান। সুনির্দিষ্ট বিশ্বাসের জনগণ, জাতিকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে অন্যদের বিষয়ে ভীতি ও ঘৃণা ছড়ানোর কৌশল, ভূখণ্ড বাড়ানোর লালসা এবং উচ্চপর্যায়ের সামরিক সংস্কৃতিÑ সবই ইসরাইলের রয়েছে।
ইহুদিবাদের আদর্শগত শিকড় চিনতে এই বর্ণবাদী ধারণাকে চিনতে হবে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ উসকে দেয়ার অন্যতম কারণ এটি। বিষয়টি আজকের ইসরাইলকে চিনতেও সহায়ক হবে। একই সাথে এও বোঝা যাবে যে, ফিলিস্তিনকে শান্তির বার্তা দিতে কেন তারা অক্ষম।
-
See more at:
http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/118874#sthash.BSDP78Nx.dpuf
জোনাথন
কুক পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্রিটিশ সাংবাদিক। ২০০১ সাল থেকে তিনি ইসরাইলের
নাজারেথে বসবাস করে আসছেন। ইসরাইল-ফিলিস্তিন দ্বন্দ্বের ওপর তার বেশ ক’টি
বই রয়েছে। এর মধ্যে Blood and Religion : The Unmasking of the Jewish
State (2006)I Israel and the Clash of Civilisations : Iraq, Iran and the
Plan to Remake the Middle East (2008) বিশেষভাবে আলোচিত। জনাথনের
Zionism’s roots help us interpret Israel today শীর্ষক লেখাটি
ইসরাইল-ফিলিস্তিন সঙ্কটের মূল বিষয়টি বুঝতে সহায়তা করবে বলে আমাদের
বিশ্বাস। লেখাটি ভাষান্তর করেছেন তানজিলা কাওকাব
ইসরাইলি সেনাবাহিনীর উপপ্রধান জেনারেল ইয়াইর গোলান গত সপ্তাহে ইহুদি গণহত্যা দিবস উপলক্ষে গেল শতাব্দীর তিরিশ দশকের জার্মানির সাথে আজকের ইসরায়েলের তুলনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘অতীতের ইউরোপের মতো আজকের ইসরাইলে বিদ্রোহের প্রক্রিয়াকে খুব সহজেই চিনে নেয়া যায়। অপরিচিতকে ঘৃণা করা কঠিন কিছু নয়। বিষয়টি খুব সহজেই ভীতি ও আতঙ্ক ছড়ায়।’ এই ব্যাখ্যা যেভাবে তিনি দাঁড় করিয়েছেন তা অন্তত তার কাছ থেকে কোনোভাবেই আশা করা যায় না।
আরেকটি বক্তব্য পাওয়া গেছে লন্ডনের সাবেক মেয়র কেন লিভিংস্টোনের কাছ থেকে। তিনি বলেন, ১৯৩৩ সালের দিকে হিটলার ইহুদিবাদীদের রীতিমতো সমর্থন করে গেছেন। ওই সময় নাৎসিরা জার্মান ইহুদিদের ফিলিস্তিনে অভিবাসনে পাঠানোর বিষয়ে একটি চুক্তি সই করে।
একটু ভিন্নভাবে হলেও দু’জনই তাদের বক্তব্যে একটি ঘৃণ্যচুক্তির বিষয় তুলে এনেছেন। এই চুক্তির কথা বর্তমানে অনেকেই বিস্মৃত। যদিও ইসরাইল-ফিলিস্তিনের সঙ্ঘাত বুঝতে এ চুক্তিটি বেশ সহায়ক হতে পারে।
১৯১৭ সালে বেলফোর ঘোষণা দেয় ব্রিটিশ সরকার। এই নথিতেই প্রথম ইহুদিদের জন্য একটি পৃথক আবাসভূমির কথা বলা হয়। ফিলিস্তিনে এমন একটি রাষ্ট্রের স্বপ্ন ইহুদিরা দীর্ঘ দিন থেকে লালন করে আসছিল। ব্রিটিশ মন্ত্রিসভার মাত্র একজন মন্ত্রী এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছিলেন। তিনি হলেন এডউইন মন্টাগো, ওই মন্ত্রিপরিষদের একমাত্র ইহুদি সদস্য। এক বিবৃতিতে তিনি ওই সময় বলেছিলেন, তার সরকারের অবস্থান প্রতিটি দেশে ইহুদিবিদ্বেষের বীজ বুনে দেবে।
একা প্রতিবাদ করলেও এই ধারণা পোষণকারী তিনিই একমাত্র ব্যক্তি ছিলেন না। ১৮৮০ সাল থেকে ১৯২০ সাল পর্যন্ত যে ৪০ লাখ ইহুদি ইউরোপ ছেড়েছিলেন তাদের মধ্যে মাত্র এক লাখ প্রত্যাশা অনুসারে ফিলিস্তিনে গিয়ে ওঠেন। ইসরায়েলি ঔপন্যাসিক এ বি ইয়েহোশুয়া একবার লিখেছিলেন, ‘বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে ইহুদিরা যদি কোনো নির্বাচনের আয়োজন করত তাহলে দেখা যেত মাত্র ছয় থেকে সাত শতাংশ ইহুদি ভোট দিয়েছে।’
মন্টাগুর ভয় ছিল, ইউরোপ থেকে বহু দূরে ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করলেই তা ইউরোপের ইহুদিবিদ্বেষের ইতি ঘটাতে পারবে না। ওই সময় ইউরোপে জাতিগোষ্ঠীগত দিক থেকে একটি ধারণা প্রতিষ্ঠিত ছিল, তা হলো, প্রতিটি গোষ্ঠীর জন্যই নিজস্ব একটি আবাসভূমির প্রয়োজন, যেখানে তারা বিকশিত হতে পারবে। ওই সময় ইহুদিদের দেখা হতো সমস্যা হিসেবে। কারণ খ্রিষ্টানপ্রধান এলাকায় তাদের বিবেচনা করা হতো জাতীয় মডেলের ক্ষেত্রে ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে।
ইহুদিরা একটি পৃথক জাতি। যে-কেউ ইচ্ছা করলেই তাদের সাথে সংহতি স্থাপন করতে পারে না। এ কারণেই তাদের ইউরোপ থেকে অন্যত্র সরিয়ে দেয়ার বিষয়টিকে উৎসাহিত করা হয়। ব্রিটিশ দৃষ্টিকোণ থেকে বেলফোর ঘোষণা ওই লক্ষ্য অর্জনের একটি হাতিয়ার ছিল।
রাজনৈতিক ইহুদিবাদের জনক থিয়োডর হেরজেল এই ইহুদিবিদ্বেষী অবস্থান খুব ভালো করেই বুঝতে পেরেছিলেন। তিনি জানতেন ইউরোপে সত্যিকারের গ্রহণযোগ্যতা কখনোই পাওয়া যাবে না।
এ কারণেই লিভিংস্টোনের মন্তব্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সত্য। এই সত্যকে হেরজেল এবং আদি ইহুদিবাদী নেতারা মেনে নিয়েছিলেন। হেরজেল মনে করতেন, ইহুদিদের অবশ্যই তাদের পৃথক সত্তা, পৃথক জাতি হওয়ার বিষয়টি মেনে নিতে হবে। ফিলিস্তিনে ইহুদিদের বসতি স্থাপনের বিষয়টি ব্রিটেনই নিষ্পত্তি করে ফেলে। এর সাথে ইউরোপের বাকি নেতৃবৃন্দের সংশ্লিষ্টতার কৃতিত্বও তাদের।
শুরুর দিকে নাৎসি নেতারাও এর সাথে সংশ্লিষ্ট ছিলেন। ইহুদি গণহত্যার অন্যতম পরিকল্পনাকারী এডলফ ইচম্যান ১৯৩৭ সালে ফিলিস্তিন সফর করেন। ইহুদিদের অভিবাসন নিশ্চিত করাই ছিল তার উদ্দেশ্য। যদিও ১৯৪৪ সাল নাগাদ নাৎসিরা অভিবাসনের ভাবনা বাতিল করে গণহত্যাকেই অধিক উপযোগী হিসেবে গ্রহণযোগ্য সমাধান হিসেবে কার্যকর করতে শুরু করে।
নাৎসিদের উত্থানের আগে ইহুদিরা ফিলিস্তিনে একটি পৃথক আবাসভূমি গড়ার তীব্র বিরোধী ছিল। এখন অবশ্য তারা আর সেসব কথা ভাবতে চায় না। আমরা স্মরণ করি সেটাও হয়তো তাদের ইচ্ছা নয়। আর যারা স্মরণ করতে চায়, লিভিংস্টোনের মতো তাদের সবার শরীরে ইহুদিবিদ্বেষীর তকমা সেঁটে দেয়া হয়। অভিযোগ করা হয়, ইহুদিবাদকে নাৎসিবাদের সাথে তুলনা করা হচ্ছে।
তবে ওই অস্বস্তিকর সময়টিকে পর্যালোচনা করার একটি ভালো কারণ এটি। ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুসহ ইসরাইলের আধুনিক নেতারা বারবারই দাবি করেন, ইহুদিদের আবাসভূমি একটিই, আর সেটি হলো ইসরাইল। ইউরোপে প্রতিটি সন্ত্রাসী হামলা হওয়ার পর তারা ইহুদিদের ইসরাইলে চলে আসার আহ্বান জানায়। তাদের যুক্তি, ইহুদিরা যেখানে আছে সেটা তাদের জন্য নিরাপদ আশ্রয় নয়।
নিজেদের পৃথক অস্তিত্ব জানান দেয়ার সব বৈশিষ্ট্য আজো ইসরাইলের মধ্যে বর্তমান। সুনির্দিষ্ট বিশ্বাসের জনগণ, জাতিকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে অন্যদের বিষয়ে ভীতি ও ঘৃণা ছড়ানোর কৌশল, ভূখণ্ড বাড়ানোর লালসা এবং উচ্চপর্যায়ের সামরিক সংস্কৃতিÑ সবই ইসরাইলের রয়েছে।
ইহুদিবাদের আদর্শগত শিকড় চিনতে এই বর্ণবাদী ধারণাকে চিনতে হবে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ উসকে দেয়ার অন্যতম কারণ এটি। বিষয়টি আজকের ইসরাইলকে চিনতেও সহায়ক হবে। একই সাথে এও বোঝা যাবে যে, ফিলিস্তিনকে শান্তির বার্তা দিতে কেন তারা অক্ষম।
- See more at: http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/118874#sthash.BSDP78Nx.dpuf
জোনাথন
কুক পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্রিটিশ সাংবাদিক। ২০০১ সাল থেকে তিনি ইসরাইলের
নাজারেথে বসবাস করে আসছেন। ইসরাইল-ফিলিস্তিন দ্বন্দ্বের ওপর তার বেশ ক’টি
বই রয়েছে। এর মধ্যে Blood and Religion : The Unmasking of the Jewish
State (2006)I Israel and the Clash of Civilisations : Iraq, Iran and the
Plan to Remake the Middle East (2008) বিশেষভাবে আলোচিত। জনাথনের
Zionism’s roots help us interpret Israel today শীর্ষক লেখাটি
ইসরাইল-ফিলিস্তিন সঙ্কটের মূল বিষয়টি বুঝতে সহায়তা করবে বলে আমাদের
বিশ্বাস। লেখাটি ভাষান্তর করেছেন তানজিলা কাওকাবইসরাইলি সেনাবাহিনীর উপপ্রধান জেনারেল ইয়াইর গোলান গত সপ্তাহে ইহুদি গণহত্যা দিবস উপলক্ষে গেল শতাব্দীর তিরিশ দশকের জার্মানির সাথে আজকের ইসরায়েলের তুলনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘অতীতের ইউরোপের মতো আজকের ইসরাইলে বিদ্রোহের প্রক্রিয়াকে খুব সহজেই চিনে নেয়া যায়। অপরিচিতকে ঘৃণা করা কঠিন কিছু নয়। বিষয়টি খুব সহজেই ভীতি ও আতঙ্ক ছড়ায়।’ এই ব্যাখ্যা যেভাবে তিনি দাঁড় করিয়েছেন তা অন্তত তার কাছ থেকে কোনোভাবেই আশা করা যায় না।
আরেকটি বক্তব্য পাওয়া গেছে লন্ডনের সাবেক মেয়র কেন লিভিংস্টোনের কাছ থেকে। তিনি বলেন, ১৯৩৩ সালের দিকে হিটলার ইহুদিবাদীদের রীতিমতো সমর্থন করে গেছেন। ওই সময় নাৎসিরা জার্মান ইহুদিদের ফিলিস্তিনে অভিবাসনে পাঠানোর বিষয়ে একটি চুক্তি সই করে।
একটু ভিন্নভাবে হলেও দু’জনই তাদের বক্তব্যে একটি ঘৃণ্যচুক্তির বিষয় তুলে এনেছেন। এই চুক্তির কথা বর্তমানে অনেকেই বিস্মৃত। যদিও ইসরাইল-ফিলিস্তিনের সঙ্ঘাত বুঝতে এ চুক্তিটি বেশ সহায়ক হতে পারে।
১৯১৭ সালে বেলফোর ঘোষণা দেয় ব্রিটিশ সরকার। এই নথিতেই প্রথম ইহুদিদের জন্য একটি পৃথক আবাসভূমির কথা বলা হয়। ফিলিস্তিনে এমন একটি রাষ্ট্রের স্বপ্ন ইহুদিরা দীর্ঘ দিন থেকে লালন করে আসছিল। ব্রিটিশ মন্ত্রিসভার মাত্র একজন মন্ত্রী এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছিলেন। তিনি হলেন এডউইন মন্টাগো, ওই মন্ত্রিপরিষদের একমাত্র ইহুদি সদস্য। এক বিবৃতিতে তিনি ওই সময় বলেছিলেন, তার সরকারের অবস্থান প্রতিটি দেশে ইহুদিবিদ্বেষের বীজ বুনে দেবে।
একা প্রতিবাদ করলেও এই ধারণা পোষণকারী তিনিই একমাত্র ব্যক্তি ছিলেন না। ১৮৮০ সাল থেকে ১৯২০ সাল পর্যন্ত যে ৪০ লাখ ইহুদি ইউরোপ ছেড়েছিলেন তাদের মধ্যে মাত্র এক লাখ প্রত্যাশা অনুসারে ফিলিস্তিনে গিয়ে ওঠেন। ইসরায়েলি ঔপন্যাসিক এ বি ইয়েহোশুয়া একবার লিখেছিলেন, ‘বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে ইহুদিরা যদি কোনো নির্বাচনের আয়োজন করত তাহলে দেখা যেত মাত্র ছয় থেকে সাত শতাংশ ইহুদি ভোট দিয়েছে।’
মন্টাগুর ভয় ছিল, ইউরোপ থেকে বহু দূরে ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করলেই তা ইউরোপের ইহুদিবিদ্বেষের ইতি ঘটাতে পারবে না। ওই সময় ইউরোপে জাতিগোষ্ঠীগত দিক থেকে একটি ধারণা প্রতিষ্ঠিত ছিল, তা হলো, প্রতিটি গোষ্ঠীর জন্যই নিজস্ব একটি আবাসভূমির প্রয়োজন, যেখানে তারা বিকশিত হতে পারবে। ওই সময় ইহুদিদের দেখা হতো সমস্যা হিসেবে। কারণ খ্রিষ্টানপ্রধান এলাকায় তাদের বিবেচনা করা হতো জাতীয় মডেলের ক্ষেত্রে ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে।
ইহুদিরা একটি পৃথক জাতি। যে-কেউ ইচ্ছা করলেই তাদের সাথে সংহতি স্থাপন করতে পারে না। এ কারণেই তাদের ইউরোপ থেকে অন্যত্র সরিয়ে দেয়ার বিষয়টিকে উৎসাহিত করা হয়। ব্রিটিশ দৃষ্টিকোণ থেকে বেলফোর ঘোষণা ওই লক্ষ্য অর্জনের একটি হাতিয়ার ছিল।
রাজনৈতিক ইহুদিবাদের জনক থিয়োডর হেরজেল এই ইহুদিবিদ্বেষী অবস্থান খুব ভালো করেই বুঝতে পেরেছিলেন। তিনি জানতেন ইউরোপে সত্যিকারের গ্রহণযোগ্যতা কখনোই পাওয়া যাবে না।
এ কারণেই লিভিংস্টোনের মন্তব্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সত্য। এই সত্যকে হেরজেল এবং আদি ইহুদিবাদী নেতারা মেনে নিয়েছিলেন। হেরজেল মনে করতেন, ইহুদিদের অবশ্যই তাদের পৃথক সত্তা, পৃথক জাতি হওয়ার বিষয়টি মেনে নিতে হবে। ফিলিস্তিনে ইহুদিদের বসতি স্থাপনের বিষয়টি ব্রিটেনই নিষ্পত্তি করে ফেলে। এর সাথে ইউরোপের বাকি নেতৃবৃন্দের সংশ্লিষ্টতার কৃতিত্বও তাদের।
শুরুর দিকে নাৎসি নেতারাও এর সাথে সংশ্লিষ্ট ছিলেন। ইহুদি গণহত্যার অন্যতম পরিকল্পনাকারী এডলফ ইচম্যান ১৯৩৭ সালে ফিলিস্তিন সফর করেন। ইহুদিদের অভিবাসন নিশ্চিত করাই ছিল তার উদ্দেশ্য। যদিও ১৯৪৪ সাল নাগাদ নাৎসিরা অভিবাসনের ভাবনা বাতিল করে গণহত্যাকেই অধিক উপযোগী হিসেবে গ্রহণযোগ্য সমাধান হিসেবে কার্যকর করতে শুরু করে।
নাৎসিদের উত্থানের আগে ইহুদিরা ফিলিস্তিনে একটি পৃথক আবাসভূমি গড়ার তীব্র বিরোধী ছিল। এখন অবশ্য তারা আর সেসব কথা ভাবতে চায় না। আমরা স্মরণ করি সেটাও হয়তো তাদের ইচ্ছা নয়। আর যারা স্মরণ করতে চায়, লিভিংস্টোনের মতো তাদের সবার শরীরে ইহুদিবিদ্বেষীর তকমা সেঁটে দেয়া হয়। অভিযোগ করা হয়, ইহুদিবাদকে নাৎসিবাদের সাথে তুলনা করা হচ্ছে।
তবে ওই অস্বস্তিকর সময়টিকে পর্যালোচনা করার একটি ভালো কারণ এটি। ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুসহ ইসরাইলের আধুনিক নেতারা বারবারই দাবি করেন, ইহুদিদের আবাসভূমি একটিই, আর সেটি হলো ইসরাইল। ইউরোপে প্রতিটি সন্ত্রাসী হামলা হওয়ার পর তারা ইহুদিদের ইসরাইলে চলে আসার আহ্বান জানায়। তাদের যুক্তি, ইহুদিরা যেখানে আছে সেটা তাদের জন্য নিরাপদ আশ্রয় নয়।
নিজেদের পৃথক অস্তিত্ব জানান দেয়ার সব বৈশিষ্ট্য আজো ইসরাইলের মধ্যে বর্তমান। সুনির্দিষ্ট বিশ্বাসের জনগণ, জাতিকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে অন্যদের বিষয়ে ভীতি ও ঘৃণা ছড়ানোর কৌশল, ভূখণ্ড বাড়ানোর লালসা এবং উচ্চপর্যায়ের সামরিক সংস্কৃতিÑ সবই ইসরাইলের রয়েছে।
ইহুদিবাদের আদর্শগত শিকড় চিনতে এই বর্ণবাদী ধারণাকে চিনতে হবে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ উসকে দেয়ার অন্যতম কারণ এটি। বিষয়টি আজকের ইসরাইলকে চিনতেও সহায়ক হবে। একই সাথে এও বোঝা যাবে যে, ফিলিস্তিনকে শান্তির বার্তা দিতে কেন তারা অক্ষম।
- See more at: http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/118874#sthash.BSDP78Nx.dpuf
জোনাথন
কুক পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্রিটিশ সাংবাদিক। ২০০১ সাল থেকে তিনি ইসরাইলের
নাজারেথে বসবাস করে আসছেন। ইসরাইল-ফিলিস্তিন দ্বন্দ্বের ওপর তার বেশ ক’টি
বই রয়েছে। এর মধ্যে Blood and Religion : The Unmasking of the Jewish
State (2006)I Israel and the Clash of Civilisations : Iraq, Iran and the
Plan to Remake the Middle East (2008) বিশেষভাবে আলোচিত। জনাথনের
Zionism’s roots help us interpret Israel today শীর্ষক লেখাটি
ইসরাইল-ফিলিস্তিন সঙ্কটের মূল বিষয়টি বুঝতে সহায়তা করবে বলে আমাদের
বিশ্বাস। লেখাটি ভাষান্তর করেছেন তানজিলা কাওকাব
ইসরাইলি সেনাবাহিনীর উপপ্রধান জেনারেল ইয়াইর গোলান গত সপ্তাহে ইহুদি গণহত্যা দিবস উপলক্ষে গেল শতাব্দীর তিরিশ দশকের জার্মানির সাথে আজকের ইসরায়েলের তুলনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘অতীতের ইউরোপের মতো আজকের ইসরাইলে বিদ্রোহের প্রক্রিয়াকে খুব সহজেই চিনে নেয়া যায়। অপরিচিতকে ঘৃণা করা কঠিন কিছু নয়। বিষয়টি খুব সহজেই ভীতি ও আতঙ্ক ছড়ায়।’ এই ব্যাখ্যা যেভাবে তিনি দাঁড় করিয়েছেন তা অন্তত তার কাছ থেকে কোনোভাবেই আশা করা যায় না।
আরেকটি বক্তব্য পাওয়া গেছে লন্ডনের সাবেক মেয়র কেন লিভিংস্টোনের কাছ থেকে। তিনি বলেন, ১৯৩৩ সালের দিকে হিটলার ইহুদিবাদীদের রীতিমতো সমর্থন করে গেছেন। ওই সময় নাৎসিরা জার্মান ইহুদিদের ফিলিস্তিনে অভিবাসনে পাঠানোর বিষয়ে একটি চুক্তি সই করে।
একটু ভিন্নভাবে হলেও দু’জনই তাদের বক্তব্যে একটি ঘৃণ্যচুক্তির বিষয় তুলে এনেছেন। এই চুক্তির কথা বর্তমানে অনেকেই বিস্মৃত। যদিও ইসরাইল-ফিলিস্তিনের সঙ্ঘাত বুঝতে এ চুক্তিটি বেশ সহায়ক হতে পারে।
১৯১৭ সালে বেলফোর ঘোষণা দেয় ব্রিটিশ সরকার। এই নথিতেই প্রথম ইহুদিদের জন্য একটি পৃথক আবাসভূমির কথা বলা হয়। ফিলিস্তিনে এমন একটি রাষ্ট্রের স্বপ্ন ইহুদিরা দীর্ঘ দিন থেকে লালন করে আসছিল। ব্রিটিশ মন্ত্রিসভার মাত্র একজন মন্ত্রী এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছিলেন। তিনি হলেন এডউইন মন্টাগো, ওই মন্ত্রিপরিষদের একমাত্র ইহুদি সদস্য। এক বিবৃতিতে তিনি ওই সময় বলেছিলেন, তার সরকারের অবস্থান প্রতিটি দেশে ইহুদিবিদ্বেষের বীজ বুনে দেবে।
একা প্রতিবাদ করলেও এই ধারণা পোষণকারী তিনিই একমাত্র ব্যক্তি ছিলেন না। ১৮৮০ সাল থেকে ১৯২০ সাল পর্যন্ত যে ৪০ লাখ ইহুদি ইউরোপ ছেড়েছিলেন তাদের মধ্যে মাত্র এক লাখ প্রত্যাশা অনুসারে ফিলিস্তিনে গিয়ে ওঠেন। ইসরায়েলি ঔপন্যাসিক এ বি ইয়েহোশুয়া একবার লিখেছিলেন, ‘বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে ইহুদিরা যদি কোনো নির্বাচনের আয়োজন করত তাহলে দেখা যেত মাত্র ছয় থেকে সাত শতাংশ ইহুদি ভোট দিয়েছে।’
মন্টাগুর ভয় ছিল, ইউরোপ থেকে বহু দূরে ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করলেই তা ইউরোপের ইহুদিবিদ্বেষের ইতি ঘটাতে পারবে না। ওই সময় ইউরোপে জাতিগোষ্ঠীগত দিক থেকে একটি ধারণা প্রতিষ্ঠিত ছিল, তা হলো, প্রতিটি গোষ্ঠীর জন্যই নিজস্ব একটি আবাসভূমির প্রয়োজন, যেখানে তারা বিকশিত হতে পারবে। ওই সময় ইহুদিদের দেখা হতো সমস্যা হিসেবে। কারণ খ্রিষ্টানপ্রধান এলাকায় তাদের বিবেচনা করা হতো জাতীয় মডেলের ক্ষেত্রে ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে।
ইহুদিরা একটি পৃথক জাতি। যে-কেউ ইচ্ছা করলেই তাদের সাথে সংহতি স্থাপন করতে পারে না। এ কারণেই তাদের ইউরোপ থেকে অন্যত্র সরিয়ে দেয়ার বিষয়টিকে উৎসাহিত করা হয়। ব্রিটিশ দৃষ্টিকোণ থেকে বেলফোর ঘোষণা ওই লক্ষ্য অর্জনের একটি হাতিয়ার ছিল।
রাজনৈতিক ইহুদিবাদের জনক থিয়োডর হেরজেল এই ইহুদিবিদ্বেষী অবস্থান খুব ভালো করেই বুঝতে পেরেছিলেন। তিনি জানতেন ইউরোপে সত্যিকারের গ্রহণযোগ্যতা কখনোই পাওয়া যাবে না।
এ কারণেই লিভিংস্টোনের মন্তব্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সত্য। এই সত্যকে হেরজেল এবং আদি ইহুদিবাদী নেতারা মেনে নিয়েছিলেন। হেরজেল মনে করতেন, ইহুদিদের অবশ্যই তাদের পৃথক সত্তা, পৃথক জাতি হওয়ার বিষয়টি মেনে নিতে হবে। ফিলিস্তিনে ইহুদিদের বসতি স্থাপনের বিষয়টি ব্রিটেনই নিষ্পত্তি করে ফেলে। এর সাথে ইউরোপের বাকি নেতৃবৃন্দের সংশ্লিষ্টতার কৃতিত্বও তাদের।
শুরুর দিকে নাৎসি নেতারাও এর সাথে সংশ্লিষ্ট ছিলেন। ইহুদি গণহত্যার অন্যতম পরিকল্পনাকারী এডলফ ইচম্যান ১৯৩৭ সালে ফিলিস্তিন সফর করেন। ইহুদিদের অভিবাসন নিশ্চিত করাই ছিল তার উদ্দেশ্য। যদিও ১৯৪৪ সাল নাগাদ নাৎসিরা অভিবাসনের ভাবনা বাতিল করে গণহত্যাকেই অধিক উপযোগী হিসেবে গ্রহণযোগ্য সমাধান হিসেবে কার্যকর করতে শুরু করে।
নাৎসিদের উত্থানের আগে ইহুদিরা ফিলিস্তিনে একটি পৃথক আবাসভূমি গড়ার তীব্র বিরোধী ছিল। এখন অবশ্য তারা আর সেসব কথা ভাবতে চায় না। আমরা স্মরণ করি সেটাও হয়তো তাদের ইচ্ছা নয়। আর যারা স্মরণ করতে চায়, লিভিংস্টোনের মতো তাদের সবার শরীরে ইহুদিবিদ্বেষীর তকমা সেঁটে দেয়া হয়। অভিযোগ করা হয়, ইহুদিবাদকে নাৎসিবাদের সাথে তুলনা করা হচ্ছে।
তবে ওই অস্বস্তিকর সময়টিকে পর্যালোচনা করার একটি ভালো কারণ এটি। ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুসহ ইসরাইলের আধুনিক নেতারা বারবারই দাবি করেন, ইহুদিদের আবাসভূমি একটিই, আর সেটি হলো ইসরাইল। ইউরোপে প্রতিটি সন্ত্রাসী হামলা হওয়ার পর তারা ইহুদিদের ইসরাইলে চলে আসার আহ্বান জানায়। তাদের যুক্তি, ইহুদিরা যেখানে আছে সেটা তাদের জন্য নিরাপদ আশ্রয় নয়।
নিজেদের পৃথক অস্তিত্ব জানান দেয়ার সব বৈশিষ্ট্য আজো ইসরাইলের মধ্যে বর্তমান। সুনির্দিষ্ট বিশ্বাসের জনগণ, জাতিকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে অন্যদের বিষয়ে ভীতি ও ঘৃণা ছড়ানোর কৌশল, ভূখণ্ড বাড়ানোর লালসা এবং উচ্চপর্যায়ের সামরিক সংস্কৃতিÑ সবই ইসরাইলের রয়েছে।
ইহুদিবাদের আদর্শগত শিকড় চিনতে এই বর্ণবাদী ধারণাকে চিনতে হবে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ উসকে দেয়ার অন্যতম কারণ এটি। বিষয়টি আজকের ইসরাইলকে চিনতেও সহায়ক হবে। একই সাথে এও বোঝা যাবে যে, ফিলিস্তিনকে শান্তির বার্তা দিতে কেন তারা অক্ষম।
- See more at: http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/118874#sthash.BSDP78Nx.dpuf
ইসরাইলি সেনাবাহিনীর উপপ্রধান জেনারেল ইয়াইর গোলান গত সপ্তাহে ইহুদি গণহত্যা দিবস উপলক্ষে গেল শতাব্দীর তিরিশ দশকের জার্মানির সাথে আজকের ইসরায়েলের তুলনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘অতীতের ইউরোপের মতো আজকের ইসরাইলে বিদ্রোহের প্রক্রিয়াকে খুব সহজেই চিনে নেয়া যায়। অপরিচিতকে ঘৃণা করা কঠিন কিছু নয়। বিষয়টি খুব সহজেই ভীতি ও আতঙ্ক ছড়ায়।’ এই ব্যাখ্যা যেভাবে তিনি দাঁড় করিয়েছেন তা অন্তত তার কাছ থেকে কোনোভাবেই আশা করা যায় না।
আরেকটি বক্তব্য পাওয়া গেছে লন্ডনের সাবেক মেয়র কেন লিভিংস্টোনের কাছ থেকে। তিনি বলেন, ১৯৩৩ সালের দিকে হিটলার ইহুদিবাদীদের রীতিমতো সমর্থন করে গেছেন। ওই সময় নাৎসিরা জার্মান ইহুদিদের ফিলিস্তিনে অভিবাসনে পাঠানোর বিষয়ে একটি চুক্তি সই করে।
একটু ভিন্নভাবে হলেও দু’জনই তাদের বক্তব্যে একটি ঘৃণ্যচুক্তির বিষয় তুলে এনেছেন। এই চুক্তির কথা বর্তমানে অনেকেই বিস্মৃত। যদিও ইসরাইল-ফিলিস্তিনের সঙ্ঘাত বুঝতে এ চুক্তিটি বেশ সহায়ক হতে পারে।
১৯১৭ সালে বেলফোর ঘোষণা দেয় ব্রিটিশ সরকার। এই নথিতেই প্রথম ইহুদিদের জন্য একটি পৃথক আবাসভূমির কথা বলা হয়। ফিলিস্তিনে এমন একটি রাষ্ট্রের স্বপ্ন ইহুদিরা দীর্ঘ দিন থেকে লালন করে আসছিল। ব্রিটিশ মন্ত্রিসভার মাত্র একজন মন্ত্রী এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছিলেন। তিনি হলেন এডউইন মন্টাগো, ওই মন্ত্রিপরিষদের একমাত্র ইহুদি সদস্য। এক বিবৃতিতে তিনি ওই সময় বলেছিলেন, তার সরকারের অবস্থান প্রতিটি দেশে ইহুদিবিদ্বেষের বীজ বুনে দেবে।
একা প্রতিবাদ করলেও এই ধারণা পোষণকারী তিনিই একমাত্র ব্যক্তি ছিলেন না। ১৮৮০ সাল থেকে ১৯২০ সাল পর্যন্ত যে ৪০ লাখ ইহুদি ইউরোপ ছেড়েছিলেন তাদের মধ্যে মাত্র এক লাখ প্রত্যাশা অনুসারে ফিলিস্তিনে গিয়ে ওঠেন। ইসরায়েলি ঔপন্যাসিক এ বি ইয়েহোশুয়া একবার লিখেছিলেন, ‘বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে ইহুদিরা যদি কোনো নির্বাচনের আয়োজন করত তাহলে দেখা যেত মাত্র ছয় থেকে সাত শতাংশ ইহুদি ভোট দিয়েছে।’
মন্টাগুর ভয় ছিল, ইউরোপ থেকে বহু দূরে ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করলেই তা ইউরোপের ইহুদিবিদ্বেষের ইতি ঘটাতে পারবে না। ওই সময় ইউরোপে জাতিগোষ্ঠীগত দিক থেকে একটি ধারণা প্রতিষ্ঠিত ছিল, তা হলো, প্রতিটি গোষ্ঠীর জন্যই নিজস্ব একটি আবাসভূমির প্রয়োজন, যেখানে তারা বিকশিত হতে পারবে। ওই সময় ইহুদিদের দেখা হতো সমস্যা হিসেবে। কারণ খ্রিষ্টানপ্রধান এলাকায় তাদের বিবেচনা করা হতো জাতীয় মডেলের ক্ষেত্রে ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে।
ইহুদিরা একটি পৃথক জাতি। যে-কেউ ইচ্ছা করলেই তাদের সাথে সংহতি স্থাপন করতে পারে না। এ কারণেই তাদের ইউরোপ থেকে অন্যত্র সরিয়ে দেয়ার বিষয়টিকে উৎসাহিত করা হয়। ব্রিটিশ দৃষ্টিকোণ থেকে বেলফোর ঘোষণা ওই লক্ষ্য অর্জনের একটি হাতিয়ার ছিল।
রাজনৈতিক ইহুদিবাদের জনক থিয়োডর হেরজেল এই ইহুদিবিদ্বেষী অবস্থান খুব ভালো করেই বুঝতে পেরেছিলেন। তিনি জানতেন ইউরোপে সত্যিকারের গ্রহণযোগ্যতা কখনোই পাওয়া যাবে না।
এ কারণেই লিভিংস্টোনের মন্তব্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সত্য। এই সত্যকে হেরজেল এবং আদি ইহুদিবাদী নেতারা মেনে নিয়েছিলেন। হেরজেল মনে করতেন, ইহুদিদের অবশ্যই তাদের পৃথক সত্তা, পৃথক জাতি হওয়ার বিষয়টি মেনে নিতে হবে। ফিলিস্তিনে ইহুদিদের বসতি স্থাপনের বিষয়টি ব্রিটেনই নিষ্পত্তি করে ফেলে। এর সাথে ইউরোপের বাকি নেতৃবৃন্দের সংশ্লিষ্টতার কৃতিত্বও তাদের।
শুরুর দিকে নাৎসি নেতারাও এর সাথে সংশ্লিষ্ট ছিলেন। ইহুদি গণহত্যার অন্যতম পরিকল্পনাকারী এডলফ ইচম্যান ১৯৩৭ সালে ফিলিস্তিন সফর করেন। ইহুদিদের অভিবাসন নিশ্চিত করাই ছিল তার উদ্দেশ্য। যদিও ১৯৪৪ সাল নাগাদ নাৎসিরা অভিবাসনের ভাবনা বাতিল করে গণহত্যাকেই অধিক উপযোগী হিসেবে গ্রহণযোগ্য সমাধান হিসেবে কার্যকর করতে শুরু করে।
নাৎসিদের উত্থানের আগে ইহুদিরা ফিলিস্তিনে একটি পৃথক আবাসভূমি গড়ার তীব্র বিরোধী ছিল। এখন অবশ্য তারা আর সেসব কথা ভাবতে চায় না। আমরা স্মরণ করি সেটাও হয়তো তাদের ইচ্ছা নয়। আর যারা স্মরণ করতে চায়, লিভিংস্টোনের মতো তাদের সবার শরীরে ইহুদিবিদ্বেষীর তকমা সেঁটে দেয়া হয়। অভিযোগ করা হয়, ইহুদিবাদকে নাৎসিবাদের সাথে তুলনা করা হচ্ছে।
তবে ওই অস্বস্তিকর সময়টিকে পর্যালোচনা করার একটি ভালো কারণ এটি। ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুসহ ইসরাইলের আধুনিক নেতারা বারবারই দাবি করেন, ইহুদিদের আবাসভূমি একটিই, আর সেটি হলো ইসরাইল। ইউরোপে প্রতিটি সন্ত্রাসী হামলা হওয়ার পর তারা ইহুদিদের ইসরাইলে চলে আসার আহ্বান জানায়। তাদের যুক্তি, ইহুদিরা যেখানে আছে সেটা তাদের জন্য নিরাপদ আশ্রয় নয়।
নিজেদের পৃথক অস্তিত্ব জানান দেয়ার সব বৈশিষ্ট্য আজো ইসরাইলের মধ্যে বর্তমান। সুনির্দিষ্ট বিশ্বাসের জনগণ, জাতিকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে অন্যদের বিষয়ে ভীতি ও ঘৃণা ছড়ানোর কৌশল, ভূখণ্ড বাড়ানোর লালসা এবং উচ্চপর্যায়ের সামরিক সংস্কৃতিÑ সবই ইসরাইলের রয়েছে।
ইহুদিবাদের আদর্শগত শিকড় চিনতে এই বর্ণবাদী ধারণাকে চিনতে হবে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ উসকে দেয়ার অন্যতম কারণ এটি। বিষয়টি আজকের ইসরাইলকে চিনতেও সহায়ক হবে। একই সাথে এও বোঝা যাবে যে, ফিলিস্তিনকে শান্তির বার্তা দিতে কেন তারা অক্ষম।
- See more at: http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/118874#sthash.BSDP78Nx.dpuf
আরেকটি বক্তব্য পাওয়া গেছে লন্ডনের সাবেক মেয়র কেন লিভিংস্টোনের কাছ থেকে। তিনি বলেন, ১৯৩৩ সালের দিকে হিটলার ইহুদিবাদীদের রীতিমতো সমর্থন করে গেছেন। ওই সময় নাৎসিরা জার্মান ইহুদিদের ফিলিস্তিনে অভিবাসনে পাঠানোর বিষয়ে একটি চুক্তি সই করে।
একটু ভিন্নভাবে হলেও দু’জনই তাদের বক্তব্যে একটি ঘৃণ্যচুক্তির বিষয় তুলে এনেছেন। এই চুক্তির কথা বর্তমানে অনেকেই বিস্মৃত। যদিও ইসরাইল-ফিলিস্তিনের সঙ্ঘাত বুঝতে এ চুক্তিটি বেশ সহায়ক হতে পারে।
১৯১৭ সালে বেলফোর ঘোষণা দেয় ব্রিটিশ সরকার। এই নথিতেই প্রথম ইহুদিদের জন্য একটি পৃথক আবাসভূমির কথা বলা হয়। ফিলিস্তিনে এমন একটি রাষ্ট্রের স্বপ্ন ইহুদিরা দীর্ঘ দিন থেকে লালন করে আসছিল। ব্রিটিশ মন্ত্রিসভার মাত্র একজন মন্ত্রী এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছিলেন। তিনি হলেন এডউইন মন্টাগো, ওই মন্ত্রিপরিষদের একমাত্র ইহুদি সদস্য। এক বিবৃতিতে তিনি ওই সময় বলেছিলেন, তার সরকারের অবস্থান প্রতিটি দেশে ইহুদিবিদ্বেষের বীজ বুনে দেবে।
একা প্রতিবাদ করলেও এই ধারণা পোষণকারী তিনিই একমাত্র ব্যক্তি ছিলেন না। ১৮৮০ সাল থেকে ১৯২০ সাল পর্যন্ত যে ৪০ লাখ ইহুদি ইউরোপ ছেড়েছিলেন তাদের মধ্যে মাত্র এক লাখ প্রত্যাশা অনুসারে ফিলিস্তিনে গিয়ে ওঠেন। ইসরায়েলি ঔপন্যাসিক এ বি ইয়েহোশুয়া একবার লিখেছিলেন, ‘বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে ইহুদিরা যদি কোনো নির্বাচনের আয়োজন করত তাহলে দেখা যেত মাত্র ছয় থেকে সাত শতাংশ ইহুদি ভোট দিয়েছে।’
মন্টাগুর ভয় ছিল, ইউরোপ থেকে বহু দূরে ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করলেই তা ইউরোপের ইহুদিবিদ্বেষের ইতি ঘটাতে পারবে না। ওই সময় ইউরোপে জাতিগোষ্ঠীগত দিক থেকে একটি ধারণা প্রতিষ্ঠিত ছিল, তা হলো, প্রতিটি গোষ্ঠীর জন্যই নিজস্ব একটি আবাসভূমির প্রয়োজন, যেখানে তারা বিকশিত হতে পারবে। ওই সময় ইহুদিদের দেখা হতো সমস্যা হিসেবে। কারণ খ্রিষ্টানপ্রধান এলাকায় তাদের বিবেচনা করা হতো জাতীয় মডেলের ক্ষেত্রে ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে।
ইহুদিরা একটি পৃথক জাতি। যে-কেউ ইচ্ছা করলেই তাদের সাথে সংহতি স্থাপন করতে পারে না। এ কারণেই তাদের ইউরোপ থেকে অন্যত্র সরিয়ে দেয়ার বিষয়টিকে উৎসাহিত করা হয়। ব্রিটিশ দৃষ্টিকোণ থেকে বেলফোর ঘোষণা ওই লক্ষ্য অর্জনের একটি হাতিয়ার ছিল।
রাজনৈতিক ইহুদিবাদের জনক থিয়োডর হেরজেল এই ইহুদিবিদ্বেষী অবস্থান খুব ভালো করেই বুঝতে পেরেছিলেন। তিনি জানতেন ইউরোপে সত্যিকারের গ্রহণযোগ্যতা কখনোই পাওয়া যাবে না।
এ কারণেই লিভিংস্টোনের মন্তব্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সত্য। এই সত্যকে হেরজেল এবং আদি ইহুদিবাদী নেতারা মেনে নিয়েছিলেন। হেরজেল মনে করতেন, ইহুদিদের অবশ্যই তাদের পৃথক সত্তা, পৃথক জাতি হওয়ার বিষয়টি মেনে নিতে হবে। ফিলিস্তিনে ইহুদিদের বসতি স্থাপনের বিষয়টি ব্রিটেনই নিষ্পত্তি করে ফেলে। এর সাথে ইউরোপের বাকি নেতৃবৃন্দের সংশ্লিষ্টতার কৃতিত্বও তাদের।
শুরুর দিকে নাৎসি নেতারাও এর সাথে সংশ্লিষ্ট ছিলেন। ইহুদি গণহত্যার অন্যতম পরিকল্পনাকারী এডলফ ইচম্যান ১৯৩৭ সালে ফিলিস্তিন সফর করেন। ইহুদিদের অভিবাসন নিশ্চিত করাই ছিল তার উদ্দেশ্য। যদিও ১৯৪৪ সাল নাগাদ নাৎসিরা অভিবাসনের ভাবনা বাতিল করে গণহত্যাকেই অধিক উপযোগী হিসেবে গ্রহণযোগ্য সমাধান হিসেবে কার্যকর করতে শুরু করে।
নাৎসিদের উত্থানের আগে ইহুদিরা ফিলিস্তিনে একটি পৃথক আবাসভূমি গড়ার তীব্র বিরোধী ছিল। এখন অবশ্য তারা আর সেসব কথা ভাবতে চায় না। আমরা স্মরণ করি সেটাও হয়তো তাদের ইচ্ছা নয়। আর যারা স্মরণ করতে চায়, লিভিংস্টোনের মতো তাদের সবার শরীরে ইহুদিবিদ্বেষীর তকমা সেঁটে দেয়া হয়। অভিযোগ করা হয়, ইহুদিবাদকে নাৎসিবাদের সাথে তুলনা করা হচ্ছে।
তবে ওই অস্বস্তিকর সময়টিকে পর্যালোচনা করার একটি ভালো কারণ এটি। ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুসহ ইসরাইলের আধুনিক নেতারা বারবারই দাবি করেন, ইহুদিদের আবাসভূমি একটিই, আর সেটি হলো ইসরাইল। ইউরোপে প্রতিটি সন্ত্রাসী হামলা হওয়ার পর তারা ইহুদিদের ইসরাইলে চলে আসার আহ্বান জানায়। তাদের যুক্তি, ইহুদিরা যেখানে আছে সেটা তাদের জন্য নিরাপদ আশ্রয় নয়।
নিজেদের পৃথক অস্তিত্ব জানান দেয়ার সব বৈশিষ্ট্য আজো ইসরাইলের মধ্যে বর্তমান। সুনির্দিষ্ট বিশ্বাসের জনগণ, জাতিকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে অন্যদের বিষয়ে ভীতি ও ঘৃণা ছড়ানোর কৌশল, ভূখণ্ড বাড়ানোর লালসা এবং উচ্চপর্যায়ের সামরিক সংস্কৃতিÑ সবই ইসরাইলের রয়েছে।
ইহুদিবাদের আদর্শগত শিকড় চিনতে এই বর্ণবাদী ধারণাকে চিনতে হবে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ উসকে দেয়ার অন্যতম কারণ এটি। বিষয়টি আজকের ইসরাইলকে চিনতেও সহায়ক হবে। একই সাথে এও বোঝা যাবে যে, ফিলিস্তিনকে শান্তির বার্তা দিতে কেন তারা অক্ষম।
- See more at: http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/118874#sthash.BSDP78Nx.dpuf
No comments:
Post a Comment